কয়েকদিন আগেই ভারতে পৃথী পিসে সমুদ্রের একেবারে ধারে সেলফি তুলতে গিয়েছিলেন। তিনি চাইছিলেন বড় যে ঢেউ আসবে সেটাকে তার সেলফির সঙ্গে ফ্রেমবন্দি করবেন।
কিন্তু বিধি বাম। পৃথী ঠিকই সেলফি তোলার জন্য একেবারে সমুদ্রের কিনারে গিয়ে দাঁড়ান। ফ্রেম ঠিক করে অপেক্ষা করতে থাকেন বড় ও বিশাল উঁচুতে আসা ঢেউয়ের।
ঢেউ ঠিকই এলো; কিন্তু আর সেলফি ওঠেনি তার। বরং সেই বিশাল ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায়, গভীর স্রোতে মুহূর্তেই অনেক লোক দেখতে পেলেন পৃথীর বিদায়।
এমন করে স্মার্টফোনে সেলফি তুলতে গিয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে ভারতে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি।
সেলফিতে মৃত্যুহার নিয়ে একটি স্টাডি করেছে কার্নেগি মেলন ইউনিভার্সিটি এবং দিল্লির ইন্দ্রাপাশতা ইন্সটিটিউট অব ইনফরমেশন।
‘মি, মাইসেল্ফ অ্যান্ড মাই কিলফি : ক্যারেক্টারাইজিং অ্যান্ড প্রিভেন্টিং সেলফি ডেথ’ নামের ওই স্টাডিতে ২০১৪ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ের তথ্য উঠে এসেছে।
সেখানে দেখানো হয়েছে এ সময় বিশ্বে সেলফি তুলতে গিয়ে মারা গেছেন ১২৭ জন। যার মধ্যে ৭৬ জনই ভারতে। তবে এ সময়ের বাইরেও ভারতে আরও বেশ কয়েকজন মারা গেছে সেলফি তুলতে গিয়ে। যেগুলো এ হিসাবে উঠে আসেনি।
তবে ওই স্টাডিতে সেলফি তুলতে গিয়ে কোন দেশে কতজনের মৃত্যু হয়েছে সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। ভারতের একজন বিখ্যাত ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট সালমা প্রভু বলেন, অতিরিক্ত সেলফি তোলা একটা নেশা।
এটাকে মানসিক সমস্যাও বলা যায়। এটা যে শুধু তরুণদের মধ্যে রয়েছে তা নয়, এটা বড়দের মধ্যেও দেখা যায়।
তিনি বলেন, এমন নেশাগ্রস্তরা মনে করেন যে কোনো মুহূর্তের ছবি তুলে তা যত দ্রুত সম্ভব ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম বা স্ন্যাপচ্যাটে শেয়ার করতে পারলে তারা আনন্দ পান। মানসিকভাবে এটাকে অনেকেই একটি প্রতিযোগিতা হিসেবেও নিয়ে নেয়। ফলে অসতর্ক থাকায় হরহামেশাই এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।
-সময়ের কণ্ঠস্বর